বুধবার, ২০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সন্তানের জন্মদিন স্টেশনের ছিন্নমূল মানুষের সাথে পালন করলেন সাংবাদিক লুৎফুল কবির

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে বাজার স্টেশনের প্লাটফর্মে থাকা হতদরিদ্র ছিন্নমূল মানুষের মাঝে আজ নিয়মিত রাতের খাবারের ব্যবস্থা করে আসছেন একদল স্চ্ছোসেবক। ২২ দিন ধরে সিরাজগঞ্জ বাজার রেলওয়ে স্টেশনে থাকা প্রান্তিক হতদরিদ্র, ভাসমান ভিখারি, তৃৃৃৃতীয় লিঙ ও মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষদের জন্য রাতের খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে মঙ্গলবার (৫ই মে) পূূর্বপশ্চিম বিডি নিউজ এর সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সাাংবাদিক সোহাগ লুৎফুল কবির নিজ সন্তানের জন্মদিন আত্মীয় পরিজনদের নিয়ে কেক কেটে উদযাপন না করে, বাজার স্টেশনের প্লাটফর্মের ভাসমান ছিন্নমূল, অসহায়, হতদরিদ্রের মাঝে প্যাকেট খাবার তুলে দিয়ে ব্যতিক্রর্মী উদাহারণ করলেন।

এ ব্যাপারে যুবলীগ নেতা, ইসাবেলা ফাউন্ডেশনের অন্যতম ভলান্টিয়ার, নোঙর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাংবাদিক সোহাগ লুৎফুল কবির জানান, তার ছোট ছেলে অর্ণবের তৃতীয়তম জন্মদিনে সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশনের প্লাটফর্মের বসবাসকারী অভুক্ত, ছিন্নমূল, তৃতীয়লিঙ্গ ও ভারসাম্যহীনদের মুখে সামান্য এক বেলা খাবার তুলে দিতে পেরে যে আত্মতৃপ্তি পেয়েছি যা হাজার কোটি টাকা দিয়েও কেনা সম্ভব নয়। সেই সাথে তিনি সবার কাছে তাার দুই সন্তানদের জন্য দোয়া কামনা করেন।

এসব খাবার সংগ্রহ ও বিতরণে সহযোগিতা করেন স্টেশনের ছিন্নমূল মানুষের মাঝে এক বেলার খাবার দেওয়ার সমন্বয়কারী রফিক সাইদ, প্রদীপ সাহা, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাক্ষর, সাংবাদিক সোহাগ লুৎফুল কবির, আব্দুস সামাদ সায়েম, আলমগীর কবির ও স্কুল শিক্ষক ইয়ামিন, যুবলীগ নেতা শরীফ আল্ শেখ।

ছিন্নমূল মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সমন্বয়কারী রফিক সাইদ জানান, ২২ দিন আগে তিনি ফেসবুকে রেলওয়ে স্টেশনে থাকা প্রান্তিক হতদরিদ্র, ভাসমান ভিখারি ও মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষদের দুরাবস্থার কথা উল্লেখ করেন। পোস্টটি আইনজীবি রুমানা ইয়াসমিন শাওনের নজরে আসার পরে প্রথম রাতে খাবারের দ্বায়িত্ব নেন। এরপর সিরাজগঞ্জ জেলা যুবলীগের সভাপতি রাসেদ ইউসুফ জুয়েল, শামীম আরা লাজ ও রেজওয়ানা ইসলাম জেমি, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আসিক আহমেদ, যুবলীগ নেতা শরীফ আল্ শেখ, অরুণ সংগঠনসহ অনেকেই প্রতিদিন খাবারের দ্বায়িত্ব নিয়ে আসছেন।

এসময় তিনি আরো জানান, স্টেশনের এই মানুষগুলো কখনো এমন সন্মান তাদের জীবনে আর পায়নি। এই সমস্ত ছিন্নমুল মানুষদের বেলায় যেটা দেখা যায়, শহরের বিয়ে বাড়ী কিংবা অন্যকোন খাবারের অনুষ্ঠানে গেলে তাদের দুরদুর ছেইছেই করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। কেউ কেউ একটু মানবিক হলে বলে-পরে আয়, বাঁচলে দিমুনি” অনুষ্ঠান শেষে শেষ পর্যন্ত তাদের কপালে জোটে ডেচকির নিচের লেগে যাওয়া পোড়া পোলাও ও সামান্য মাংসের ঝোল। কখনো সন্মানের সাথে তা দেওয়া হয় না। কিন্তু চলমান করোনা দুর্যোগে স্টেশনে বসবাসকারী ঘরহীন ভাসমান এই মানুষগুলো পেলো এক দুর্লভ সম্মান। যা তারা তাদের জীবনে কখনো পায়নি। প্রতিদিন বিভিন্ন মানবিক হৃদয়ের মানুষ প্যাকেট করা খাবারের নিদিষ্ট অতিথি এসব ছিন্নমুল মানুষরাই।

এই বিভাগের আরো খবর